এনামুল হক রাশেদী, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি)সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেওয়ার উদ্যোগের প্রতিবাদে ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে বন্দরসংলগ্ন বড়পোল, আগ্রাবাদ ও সিম্যান্স হোস্টেল এলাকায় অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষা পরিষদ।
শনিবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য হাসান মারুফ রুমী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এর আগে সকালে অনুষ্ঠিত এক কনভেনশনে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) একই দাবিতে ২৬ নভেম্বর সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরের সব প্রবেশমুখ অবরোধের ঘোষণা দেয়।
শান্তিপূর্ণ অবস্থান ধর্মঘটের সতর্ক বার্তা
সংবাদ সম্মেলনে হাসান মারুফ রুমী বলেন, “আমরা সিরিজ কর্মসূচি দেব না। তবে ২৪ নভেম্বর শান্তিপূর্ণ অবস্থান ধর্মঘট পালন করব। কেউ উসকানি দিলে তার পরিণতি শুভ হবে না।” তিনি বলেন, বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে বন্দর স্থাপনা ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত পূর্ববর্তী সরকারের নীতিরই ধারাবাহিকতা। “শেখ হাসিনার বিচারের রায় ঘোষণার দিন বন্দর ইজারা চুক্তি করা হয়েছে—এটি উদ্দেশ্যমূলক। দেশের সম্পদ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানার অধিকার জনগণের আছে।”
‘অর্থনীতির লাইফলাইন বন্দর বিদেশিদের হাতে যাবে না’
তিনি আরও বলেন, “বন্দরে দুর্নীতির কথা বলা হলে প্রথমে তদন্ত, তারপর সংস্কার হওয়া উচিত। সিসিটি–এনসিটি বিদেশিদের কাছে হস্তান্তরের আমরা স্পষ্ট বিরোধিতা করছি।”
হাসান রুমী জানান, সম্ভাব্য লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালে ঘোষিত ৫,৪০০ কোটি টাকার বিনিয়োগের মধ্যে ২,০০০ কোটি টাকার সরঞ্জাম বিদেশ থেকেই আনা হবে—যা দেশের অর্থনীতিতে প্রত্যক্ষ সুফল দেবে না।
‘কিছু মানুষের স্বার্থে দেশের সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে’
বিভাগীয় শ্রমিক দলের সদস্য মো. হুমায়ুন কবীর অভিযোগ করেন, “কিছু মানুষের লাভের জন্য বন্দর স্থাপনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। পিসিটি ইতোমধ্যে ইজারা দেওয়া হয়েছে, এখন আরও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।”
তিনি আরও বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরের কোনও কর্মচারী দুর্নীতিতে জড়িত নন—আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি। যদি আমাদের ভুল পান লিখবেন, কিন্তু এনসিটি–সিসিটি বিদেশিদের হাতে তুলে না দেওয়ার বিষয়ে জনগণকে সচেতন করুন।”
চট্টগ্রাম বন্দরের ‘ইজারা নীতি’ নিয়ে ক্ষোভ ও উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে আগামী দুই দফা অবরোধ কর্মসূচি এখন আলোচনা কেন্দ্রবিন্দুতে।
