এনামুল হক রাশেদী, চট্টগ্রামঃ
নতুন দুটি জাহাজ থেকে বছরে অন্তত ২০০ কোটি টাকার বেশি অতিরিক্ত আয় হতে পারে।
নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) নতুন জাহাজ ‘এমভি বাংলার নবযাত্রা’ বহরে যুক্ত হতে প্রস্তুত। চীনের নানইয়াং শিপইয়ার্ডে নির্মিত জাহাজটি আগামী ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর সমুদ্র পরীক্ষায় (ট্রায়াল রান) অংশ নেবে। ট্রায়াল রানে কোনো ত্রুটি ধরা না পড়লে বিএসসি জাহাজটি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করবে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের পর দীর্ঘ ছয় বছর নতুন জাহাজ কেনা বন্ধ ছিল। চলতি বছর বিএসসি সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে দুটি জাহাজ কিনেছে। এর মধ্যে ‘এমভি বাংলার প্রগতি’ গত মাসেই বহরে যুক্ত হয়ে চলাচল শুরু করেছে। নতুন জাহাজ ‘এমভি বাংলার নবযাত্রা’ আগামী বছরের শুরুতে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচল করবে বলে কর্পোরেশনটি জানিয়েছে।
বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক জানান, “আমরা নানাভাবে বিশ্লেষণ করে দেখেছি—ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট রাখার চেয়ে জাহাজ কেনা বেশি লাভজনক। তাই প্রথমবারের মতো বিএসসি সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে দুটি জাহাজ কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। বোর্ডের অনুমোদনের মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই আমরা দুটি জাহাজ বহরে যুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি।”
তিনি জানান, দরপত্রে সুস্পষ্ট শর্ত ছিল—কার্যাদেশপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে চুক্তি স্বাক্ষরের ছয় মাসের মধ্যেই জাহাজ হস্তান্তর করতে হবে। ফলে ইতোমধ্যেই একটি জাহাজ হস্তান্তর সম্পন্ন হয়েছে এবং দ্বিতীয়টিও দ্রুত পাওয়া যাবে।
চীনে নির্মিত হলেও জাহাজ দুটির সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হলো যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হেলেনিক ড্রাই বাল্ক ভেঞ্চারস এলএলসি। ৩ জুন আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের পর কারিগরিভাবে দুটি প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হয়। পরে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে ৯৩৬ কোটি টাকায় দুই জাহাজ কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে একটি জাহাজ বিএসসিকে বুঝিয়ে দিয়েছে, আরেকটি খুব শিগগিরই হস্তান্তর করা হবে।
নতুন জাহাজ ৬৩ হাজার ৫শ’ টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন। ১৯৯.৯৯ মিটার দৈর্ঘ্য, ৩২.২৬ মিটার প্রস্থ ও ১৩.৫ মিটার ড্রাফটবিশিষ্ট এই আধুনিক জাহাজ বহরে যুক্ত হলে বিএসসির জাহাজের সংখ্যা দাঁড়াবে সাতটিতে।
বিএসসির সংশ্লিষ্ট সূত্র মনে করছে, নতুন দুটি জাহাজ থেকে বছরে অন্তত ২০০ কোটি টাকার বেশি অতিরিক্ত আয় হতে পারে। পাশাপাশি বছরে পালাক্রমে কমপক্ষে ১৫০ জন নাবিকের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হবে।
