মৌলভীবাজারের গর্বিত সন্তান বিজ্ঞানী ও গবেষক ডক্টর আতাউল করিম

তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: ডক্টর মোহাম্মদ আতাউল করিম একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী-আমেরিকান বিজ্ঞানী,গবেষক ও শিক্ষাবিদ,যিনি ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল সিস্টেম, অপটিক্যাল কম্পিউটিং এবং প্যাটার্ন রিকগনিশন (pattern recognition) ক্ষেত্রে তার দক্ষতার জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। তিনি ম্যাসাচুসেটস ডার্টমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট এবং এক্সিকিউটিভ ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

ডক্টর মোহাম্মদ আতাউল করিম ১৯৫৩ সালের ৪ঠা মে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন একজন চিকিৎসক এবং মা ছিলেন গৃহিণী। তিনি বড়লেখার ষাটমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার শিক্ষা জীবন শুরু করেন।

ভাসমান ট্রেন প্রযুক্তি: ড. করিম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্রুতগামী ভাসমান ট্রেন (ম্যাগলেভ ট্রেন) চলাচল প্রযুক্তি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার নেতৃত্বে আবিষ্কৃত সাশ্রয়ী মডেলের জন্য প্রতি মাইল ট্র্যাক বা লাইন প্রস্তুত করতে খরচ অনেক কমে যায় (আগের ১১০ মিলিয়ন ডলারের জায়গায় মাত্র ১২-১৩ মিলিয়ন ডলার) নেমে আসে।

গবেষণা ও প্রকাশনা: তিনি “অ্যাপ্লাইড অপটিক্স” (Applied Optics) জার্নালের ৫০ বছরের ইতিহাসে শীর্ষ ৫০ জন গবেষকের মধ্যে স্থান পেয়েছেন, যারা এই জার্নালে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন। তিনি ১৯টি পাঠ্য ও রেফারেন্স বই এবং ৩৫০টিরও বেশি গবেষণা প্রবন্ধের রচয়িতা একসাথে সম্পাদক।

সম্মাননা ও ফেলোশিপ: তিনি ইনস্টিটিউট অফ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার্স (IEEE), অপটিক্যাল সোসাইটি অফ আমেরিকা (OSA), এবং বাংলাদেশ একাডেমি অফ সায়েন্স সহ বেশ কয়েকটি মর্যাদাপূর্ণ পেশাদার সংস্থার নির্বাচিত পেলো।

শিক্ষাজীবন: তিনি ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে বিএসসি (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ১৯৭৮ সালে আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে এমএস, ১৯৭৯ সালে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এমএস এবং ১৯৮২ সালে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

কর্মজীবন: ম্যাসাচুসেটস ডার্টমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি,তিনি ওল্ড ডোমিনিয়ন ইউনিভার্সিটির গবেষণার প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট, সিটি কলেজ অফ নিউ ইয়র্কের ডিন অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

ডক্টর মোহাম্মদ আতাউল করিম তার উদ্ভাবনী গবেষণা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের নাম গর্বের সাথে উজ্জ্বল করেছেন।

Facebook Comments Box
Share:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *