আড়াইহাজারেককলেট বিস্ফোরণের সন্দেহজনকভাবে, বাস চালক মোবারক হোসেন আটক

সোলায়মান হাসান: নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আটক মোবারক হোসেনকে নির্দোষ দাবি করেছেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ। এলাকাবাসীর ভাষায়, তিনি একজন পরিশ্রমী ও নিরীহ চালক, যার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই।

ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার বিকেলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফকির ফ্যাশন গার্মেন্টসের উদ্দেশ্যে আড়াইহাজার পায়রা চত্বর অতিক্রম করার সময় হঠাৎ একটি ককটেল সদৃশ বস্তু বিস্ফোরিত হয়। এতে চারপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তখন ফকির ফ্যাশনের বাসচালক মোবারক হোসেন ভাঙচুরের আশঙ্কায় বাসটি দ্রুত স্থান ত্যাগ করে শাহজালাল মিয়ার কাঁচামালের আড়তের পাশে নিরাপদে রাখেন।

পরে কয়েকজন ব্যক্তি তাকে “সন্দেহভাজন” মনে করে আটক করে আড়াইহাজার থানার পুলিশে সোপর্দ করেন।

নিরীহ মানুষকে সন্দেহের জালে ফাঁসানো দুঃখজনক — এলাকাবাসী স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নরসিংদী জেলার মাধবদী থানাধীন কাঠালিয়া ইউনিয়নের নোয়াকান্দি গ্রামের মৃত জোবেদ আলীর ছেলে মোবারক হোসেন একজন অতি সাধারণ মানুষ। রাজনীতি বা কোনো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তার সম্পর্ক নেই।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “মোবারক ভাই প্রতিদিন সকালে শ্রমিক পরিবহন করেন, রাতে বাস রেখে চলে যান। রাজনীতি বোঝেন না, শুধু পরিবার চালান।”

আরেকজন বলেন, “কেবল ভয় পেয়ে গাড়ি সরিয়ে নিয়েছিলেন, কিন্তু তাতেই তাকে সন্দেহভাজন ধরা হলো—এটা খুবই অন্যায়।”

ফকির ফ্যাশনের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে এ বিষয়ে ফকির ফ্যাশন লিমিটেডের প্রশাসনিক জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) শামীম হক বলেন, “উক্ত বাস চালক ও বাস আমাদের কোম্পানির শ্রমিক পরিবহনে নিযুক্ত নয়। আমরা ঘটনাটি সম্পর্কে আড়াইহাজার থানার অফিসার ইনচার্জকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।”
তদন্ত চলছে — আড়াইহাজার থানার ওসি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাস্থল থেকে কোনো বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা যায়নি। প্রাথমিকভাবে এটি একটি ভুল বোঝাবুঝি বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

আড়াইহাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, “ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে। নির্দোষ প্রমাণিত হলে মোবারককে মুক্তি দেওয়া হবে।”
মানুষের দাবি — “একজন শ্রমজীবী চালককে অন্যায়ভাবে হয়রানি বন্ধ হোক”
এলাকাবাসী ও পরিবহন শ্রমিকরা জানিয়েছেন, একজন দরিদ্র চালককে সন্দেহের বশে আটক করা দুঃখজনক। তারা সুষ্ঠু তদন্ত ও মোবারক হোসেনের মুক্তি দাবি করেছেন।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে এবং স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে
শেষাংশে প্রশ্ন রয়ে যায় —
একজন সাধারণ মানুষ যদি আতঙ্কে নিজের গাড়ি সরিয়ে নেয়, সেটাই কি তার অপরাধ?

Facebook Comments Box
Share:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *