আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগে ডায়ালাইসিস সেবা কার্যত বন্ধের পথে। হাসপাতালের ১৯টি ডায়ালাইসিস মেশিনের মধ্যে ১৭টি অচল হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন কিডনি রোগীরা। নিয়মিত ডায়ালাইসিস না পেয়ে অনেকেই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন রোগী ও স্বজনরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরায় সরকারি পর্যায়ে ডায়ালাইসিসের একমাত্র কেন্দ্র এটি। বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে সেবা সীমিত ও ব্যয়বহুল হওয়ায় দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত রোগীরা এখন কার্যত চিকিৎসাহীন অবস্থায় আছেন। প্রায় ১৫০ জন নিয়মিত রোগীর মধ্যে অনেকে সাপ্তাহিক দুই সেশন না পেয়ে এক সেশনে সীমাবদ্ধ রয়েছেন। কেউ কেউ আবার সপ্তাহে একবারও ডায়ালাইসিসের সুযোগ পাচ্ছেন না।
কাশেম আলী নামের এক রোগীর স্ত্রী জানান,
“আমার স্বামীকে সপ্তাহে দুইবার ডায়ালাইসিস করতে হয়। এখন মেশিন না থাকায় খুলনায় যেতে হচ্ছে। যাওয়া-আসা ও চিকিৎসা খরচ মিলে সপ্তাহে ৬-৭ হাজার টাকা লাগে, যা আমাদের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়।”
হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বেশিরভাগ মেশিনই দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারের কারণে বিকল হয়ে গেছে। যন্ত্রাংশের অভাব ও রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতিতে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, কিডনি রোগীদের জন্য নিয়মিত ডায়ালাইসিস জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা। এটি বন্ধ থাকলে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমে মৃত্যুঝুঁকি তৈরি হয়।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শেখ কুদরত-ই-খুদা বলেন,
“মেশিনগুলো পুরোনো হয়ে গেছে। কিছু অংশ বিকল। নতুন মেশিন আনা ও পুরোনোগুলোর মেরামতের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমরা দ্রুত সমাধান আশা করছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের পাশে সাংবাদিক সমাজ, প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ দাঁড়ান। যেন বিষয়টি সরকারের নজরে এসে দ্রুত নতুন মেশিন সরবরাহ করা হয়।”
বর্তমানে মাত্র দুটি মেশিন চালু থাকায় শতাধিক রোগী জীবন বাঁচানোর লড়াইয়ে প্রতিদিন সংগ্রাম করছেন সাতক্ষীরায়।
