১১মাস ধরে ঘরবন্দী অসহায় এক পরিবার

তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে জমি দখলে নিতে ১১ মাস ধরে একটি পরিবারকে ঘরবন্দী করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রোববার (৩০শে নভেম্বর) উপজেলার সাতগাওঁ ইউনিয়নের আঐ গ্রামের স্কুল শিক্ষক আব্দুর রহিম (৭০) এর পরিবার জানিয়েছেন-চলাচলের পথ না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে অবরুদ্ধ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। এমন বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেতে আব্দুর রহিমের ছেলে নূরুল আফসার সাইফুল গত বৃহস্পতিবার শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার সাতগাওঁ ইউনিয়নের লছনা হাইস্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম অবসর নেয়ার পর একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়ে স্বপরিবারে ঢাকার গাজীপুরে বসবাস শুরু করেন। গাজীপুরে দীর্ঘসময় বসবাসের সুযোগে ভাতিজা আজাদ মিয়া (৩৫) ও অপর ভাইয়েরা মিলে আব্দুর রহিমের বসত ভিটা দখলে নিতে চেষ্টা করে। এতে ভিটার ৭০-৮০টি গাছ কেটে ও বাড়ির জায়গার অংশবিশেষ দখলে নেয়। এনিয়ে ভাই ও ভাতিজাদের সাথে আব্দুর রহিমের জমি নিয়ে বিরোধের সুত্রপাত হয়। গত জানুয়ারী মাস থেকে আব্দুর রহিমের পরিবার বসত ভিটায় ফিরে এসে বসবাস শুরু করে। এসময় ভাতিজা আজাদ মিয়া টিনের বেড়া ও বড়ই গাছের কাটা দিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। এতে আব্দুর রহিম মাষ্টারের পরিবারটি এক প্রকার ঘরবন্দী হয়ে পড়েন। অন্যের বাড়ির উঠোন দিয়ে চলাচল করছেন। তিনি চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি খুলে দিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এদিকে প্রতিবেশী দুলাল মিয়া (৪০) জানান, ছোট বেলা থেকে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে আসছি। রাস্তাটি চালু ছিল। কিন্তু রহিম মাষ্টারের সাথে শত্রুতার জের ধরে আজাদ মিয়া রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। জানতে চাইলে আজাদ মিয়া বলেন- চাচা আব্দুর রহিম এর সাথে জমি নিয়ে যে বিরোধ চলছে তার নিষ্পত্তি না হওয়ায় রাস্তা বন্ধ রাখা হয়েছে। যোগাযোগ করা হলে সাতগাওঁ ইউনিয়নের সদস্য মাহমুদ আলী বলেন, মাষ্টার সাহেবের পরিবারের চলাচলের রাস্তাটা খুলে দেয়ার জন্য আজাদ মিয়াকে একাধিকবার অনুরোধ করলেও সে কথা শোনেনি। এখন রাস্তা খুলে দিতে তো কারো মাথায় লাঠি মারতে পারি না।

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ইসলাম উদ্দিন বলেন- এবিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন।

Facebook Comments Box
Share:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *