April 19, 2024, 8:15 am
সর্বশেষ:
বান্দরবানের রুমা-থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি: ১৭ নারীসহ ৫২ জন রিমান্ডে মোরেলগঞ্জে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত আলফাডাঙ্গায় প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী- ২০২৪ উদযাপন শার্শায় সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকের উপর হামলা সোনারগাঁ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী কালামের নির্বাচনী কর্মীসভা অনুষ্ঠিত আমিরাতে কানাইঘাট প্রবাসী সমাজকল্যাণ পরিষদের ঈদ পুর্নমিলনী চরভদ্রাসনে শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে মায়ের মামলায় তার বাবাকে গ্রেফতার বান্দরবানে পর্যটকের খরা, হতাশ ব্যবসায়ীরা সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে মৌলভীবাজারে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত সোনারগাঁয়ে জামপুরে তালতলায় ইট ভাটায় গাড়ি ভাংচুর ও হামলায় আহত ৫

সাতক্ষীরায় সরকারি জাল র্কোটফির রমরমা ব্যবসা, মামলা দায়ের

  • Last update: Wednesday, June 23, 2021

আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালের পৃথক ২টি মামলায় জাল কোর্ট ফি দাখিল করার অভিযোগে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এর হস্তক্ষেপে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালের বিচারক (যুগ্ম জেলা জজ) মো: জাহিদুল আজাদ এর নির্দেশে অফিস সহকারী মো: শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে গতকাল ওই মামলাটি দায়ের করেন।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরার আদালত পাড়ায় দীর্ঘ দিন যাবৎ বিভিন্ন মামলায় উচ্চ মূল্যের জাল কোর্ট ফি ব্যবহারের রমরমা ব্যবসা চলছিল। কোন ভাবেই ওই জালিয়াতি চক্রকে চিহ্নিত করা যাচ্ছিলনা বলে অভিযোগ আদালত সংশ্লিষ্ঠ অনেকেরই। সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান বেশ কিছুদিন যাবৎ গোপনে ওই চক্রটিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

শেষ পর্যন্ত গত ২৪ মে সাতক্ষীরার ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালে পৃথক ২টি মামলা দাখিল করা হয়, যার মামলা নং এল, এস ১৫৭২/২১ ও ১৫৭৩/২১। মামলা ২টি সেরেস্তায় দাখিল করেন সিনিয়র আইনজীবী মো: শহীদ উল্লাহ (২) এবং তাঁর ছোট ভাই আইনজীবী মোঃ হেদায়েত উল্লাহ এর আইনজীবী সহকারী আব্দুল খালেক। দাখিলকৃত মামলা ২টিতে ১০০০ টাকা মূল্যমানের পৃথক ২টি কোর্ট ফি জমা দেওয়া হয়, যার ক্রমিক নম্বর ৮৩৭৬৭৭৭ ও ৮৩৭৬৭৭৮। কথিত কোর্ট ফি ২টি গত ৭ মে ট্রেজারী অফিস, সাতক্ষীরা হতে তোলা হয়েছে মর্মে অপর পৃষ্টায় সীল মোহর দেয়া আছে। নথি ২টি পর্যালোচনার এক পর্য়ায়ে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালের বিচারক (যুগ্ম জেলা জজ) মো: জাহিদুল আজাদ দাখিলকৃত কোর্ট ফি ২টি জাল মর্মে সন্দেহ করায় তিনি গত ২৪ মে এক আদেশে ট্রেজারী অফিসার, সাতক্ষীরাকে তদন্ত করে ২০ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। ট্রেজারী অফিসার, সাতক্ষীরা মো: আজাহার আলী ২০.৬.২১ তারিখে ০৫, ৪৪, ৮৭০০, ০১৫, ০১২, ২১- ৪৬ ও ৪৭ (যুক্ত) স্বারকে এক প্রতিবেদন দাখিল করে উল্লেখ করেন যে, গত ৭ মে ৮৩৭৬৭৭৭ ও ৮৩৭৬৭৭৮ ক্রমিক নম্বরের ১০০০ টাকা মূল্যমানের পৃথক ২টি কোর্ট ফি অত্র অফিস হতে সরবরাহ করা হয় নাই এবং উহাতে যে ঠিকানাযুক্ত হিসাব রক্ষকের সীল ও স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে সেটি জাল। উক্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর ২০ জুন এক আদেশে বিচারক মোঃ জাহিদুল আজাদ বিষয়টি একটি ফৌজদারী অপরাধ বিবেচনায় জাল কোর্ট ফি ব্যবহারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অফিস সহকারী মোঃ শহিদুল ইসলামকে নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী অফিস সহকারী মোঃ শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন। এজাহারে তিনি কোন আসামীর নাম উল্লেখ না করলেও লিখেছেন, “সেরেস্তায় মামলা ২টি দাখিল করেন আইনজীবী সহকারী আব্দুল খালেক। তিনি আরও লিখেছেন, জাল কোর্ট ফি প্রস্তুত, ক্রয়-বিক্রয় এবং ব্যবহারের সাথে এক বা একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে মর্মে সন্দেহ করা হয়।”

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি তদন্ত বাবুল আক্তার জানান, এজাহারটি নিয়মিত মামলা হিসাবে রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অপরদিকে সাতক্ষীরা জজ আদালতের সরকারি কৌশুলি শম্ভু নাথ সিংহ এ ধরনের জাল-জালিয়াতির সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।

এছাড়া ট্রাইব্যুনালে দাখিলকৃত মামলা ২টির ফাইলিং ল’ইয়ার মো: শহীদ উল্লাহ (২) এবং তাঁর ছোট ভাই আইনজীবী মো: হেদায়েত উল্লাহ জানান, আইনজীবী সহকারী আব্দুল খালেক আদালতের সেরেস্তায় মামলা ২টি দাখিল করেছেন, তিনিই কোর্ট ফি’র বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন। তবে আইনজীবী সহকারী আব্দুল খালেকের ০১৯২৫৫৩৫১৮৬ নম্বর মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায়, জেলার বিভিন্ন আদালত সহ সেটেল্টমেন্ট অফিসে দীর্ঘ দিন যাবৎ একটি চক্র জাল কোর্ট ফি ব্যবহার করে আসছে। চক্রটি ঢাকায় জাল কোর্ট ফি তৈরীর কারখানা হতে নাম মাত্র মূল্যে কোর্ট ফি কিনে এনে সাতক্ষীরার দুই এক জন স্ট্যাম্প ভেন্ডার, কিছু আইনজীবী সহকারী ও আদালতের কিছু অসাধু কর্মচারীদের সাথে যোগসাজসে বিক্রি ও ব্যবহার করে আসছে। ইতোপূর্বে ৮/১০ বছর আগে সাতক্ষীরার জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার সহকারি পরিচালক বদরুল হাসান এবং সদরের এএসপি সার্কেল দোলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে শহরের সেটেল্টমেন্ট অফিস এলাকা হতে বোরকা এবং জিন্সের প্যান্ট পরা এক নারীকে কয়েক শত টাকা মূল্যের জাল কোর্ট ফি সহ হাতে নাতে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয় এবং পরে ওই নারীর লাবসাস্থ নিজ বাড়ী থেকে কয়েক হাজার টাকা মূল্যের কোর্ট ফি উদ্ধার করে পুলিশ। ওই নারীর দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সে সময় একাধিক আইনজীবী সহকারী এবং কয়েকজন ষ্ট্যাম্প ভেন্ডারকেও আটক করা হয়। সে সময় সদর থানার এস আই জসিম মামলাটি তদন্ত করলেও প্রকৃত অপরাধীরা রয়ে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। যে কারনে বন্ধ হয়নি জাল কোর্ট ফি ব্যবহারের প্রতিযোগিতা। ফলে সরকার হারাচ্ছে মোটা অংকের রেভিনিউ।

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ
© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC