এনামুল হক রাশেদী, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সহকারী রেজিস্ট্রার আবুল মনসুর শিকদারকে ক্যাম্পাস থেকে ধরে নিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারন ছাত্ররা। ধৃত আবুল সনসুর শিকদার তাকে নাজেহাল করে থানায় নিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য চবি’র ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা–কর্মীদের বিরোদ্ধে অভিযোগ করেছে। ২০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাস এলাকার মসজিদের সামনে থেকে তাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ্য করা হয়। ধৃত ব্যক্তি আবুল মনসুর শিকদার বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার সমিতির সহঃসাধারণ সম্পাদক এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন, অভিযোগ আছে আবুল মনসুর শিকদার পতীত আওয়ামী সরকারের আমলে দলীয় প্রভাব বিস্তার করে অনৈতিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্টারের পদ দখল করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, তিনি বর্তমানে বনবিদ্যা ও পরিবেশবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে কর্মরত। বৃহস্পতিবার বিকেলে অফিস শেষে বাসায় ফেরার পথে সাধারন ছাত্র ও শিবির কর্মীরা তাঁর গতিরোধ করে। পরে তাঁর সাথে ধাক্কাধাক্কি ও টানা হেঁছড়ার পর থানায় নিয়ে যায়।
হাটহাজারী থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আবুল মনসুর শিকদার মামুন নামে শিবিরের এক নেতা হত্যা মামলার আসামি। মামুন হত্যা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গত বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এ মামলা দায়ের হয়।”
বনবিদ্যা ও পরিবেশবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক মো. মোশাররফ হোসাইন জানান, বিকেল চারটার দিকে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন এবং একজন কর্মচারীকে থানায় পাঠিয়ে খোঁজখবর নেন।
ইসলামী ছাত্রশিবির চবি শাখার সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, “শিবির কর্মী মামুন হোসেন হত্যার মামলার আসামি মনসুর শিকদার। গত বছরের ৫ আগস্টের পর তিনি ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী তাঁকে থানায় হস্তান্তর করেছে। এ সময় কিছু ধস্তাধস্তি হয়েছে বলেও শুনেছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সহরাওয়ার্দী বলেন, ২০১৪ সালে আমানত হলে শিবির কর্মী মামুন হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মনসুর শিকদার ৫ নম্বর আসামি। জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর নিহত মামুনের ভাই বাদী হয়ে আদালতে মামলা করলে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে শিবির নেতা এবং মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মামুন হোসেন নিহত হন। ওই ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছিল।
