April 25, 2024, 6:57 pm

ভালো হতে বলা সেই মাসুদের খবর নিলেন হাইকোর্ট

  • Last update: Tuesday, September 14, 2021

মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপে আর্থিক সঙ্কটের ধাক্কা লাগে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের উপর। সংক্রমন বন্ধ ছিলো দেশের অফিস-আদালত। পরিস্থিতিতে অর্থকষ্টে পড়াদের একজন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাসুদ রানা। যিনি কালো কোর্ট পরে রাইড শেয়ারিং করে ভাইরাল হয়েছিলেন। যেটি গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছিলো। এক পর্যায়ে অ্যাডভোকেট মো. মাসুদ রানাকে নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে তখন আলোচনা-সমালোচনাও হয়েছিল। আদালত চালু হওয়ার পর সেই মাসুদ রানার খোঁজ-খবর নিয়েছেন হাইকোর্ট।

গতকাল সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে একটি হত্যা মামলার আসামির জামিন শুনানি চলছিল। ওই মামলায় আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. মাসুদ রানা। মাসুদ রানাকে শুনানিতে দেখে আদালত জানতে চান, ‘মিস্টার মাসুদ আপনি এখনো রাইড শেয়ারিং করেন কি না? তখন মাসুদ রানা বলেন, মাই লর্ড, এখন তো কোর্ট খুলেছে। এখন আর রাইড শেয়ারিং করি না।’

পরে অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালত আমার বাইক রাইডিংয়ের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখেছেন। বলেছেন, কোনো কাজই খারাপ বা লজ্জার নয়। এসময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।’

তবে এর আগে গত ১৯ জুলাই হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ রানাকে সতর্ক করে বলেছিলেন, এসব করে (রাইড শেয়ার) আদালতের ভাবমূর্তি নষ্ট করবেন না। ভালো হয়ে যান মিস্টার মাসুদ রানা। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কথা বলেন।

ওইদিন আইনজীবী মাসুদ রানার ২টি মামলায় দুই আসামির জামিনের আবেদন ছিল এ বেঞ্চে। সকালে মামলা দুটি শুনানি করতে গেলে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান তার বাইক চালানোর প্রসঙ্গ তোলেন। তখন আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি তাকে দেখেন বলেন, ‘মিস্টার মাসুদ আপনি বিখ্যাত হয়ে গেছেন বাইক চালিয়ে। এগুলো করবেন না। আপনি ভালো হয়ে যান।’

গত ১৬ জুলাই বাইক রাইডিংয়ের একটি ছবি শেয়ার করে অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আবেগঘন একটি পোস্ট দেন। ‘মাননীয় প্রধান বিচারপতি, আপনার কোর্ট অফিসার এখন বাইক রাইডার’ শিরোনামে দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, আইনপেশা লকডাউনে সম্পূর্ণ বন্ধ। লকডাউন ব্যতিত সময়ে সীমিত পরিসরে ভার্চুয়াল কোর্ট ছিল। কিন্তু এখন লকডাউন স্থগিত হলেও কোর্ট বন্ধ। সব পেশার মানুষ কাজ করতে পারছেন, শুধু আইনজীবীরাই কর্মহীন।

পোস্টে তিনি আরও লেখেন, দীর্ঘ ১ বছর চার মাস উপার্জনহীন থাকলেও বাড়ি ভাড়া, চেম্বার ভাড়া, বার কাউন্সিল, বার অ্যাসোসিয়েশনসহ জীবন-যাপন ব্যয় থেমে নেই। কোর্ট অফিসারদের (আইনজীবী) চরম দুর্দিন চলছে। আইনজীবীদের চিফ অথরিটি মাননীয় প্রধান বিচারপতি, কিন্তু তাকে কিছু বলা যাবে না। আদালত অবমাননার অভিযোগে সনদ চলে যায়। অনেকেই আপদকালীন ভিন্ন পেশা গ্রহণ করলেও সংখ্যাগরিষ্ঠরা কোর্ট খোলার আশায় আছেন। কিন্তু আমি অতি সাধারণ, তাই এত কিছু না ভেবে কর্ম এবং উপার্জনের লক্ষ্যে আপদকালীন এ বাইক রাইডিং পেশা শুরু করলাম। সবার নিকট দোয়া চাই। সবাই ভাল থাকবেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ
© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC