রফিকুল ইসলাম রফিক, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: বাংলাদেশ ও ভূটানের যৌথ উদ্যোগে কুড়িগ্রামে হচ্ছে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। এরইমধ্যে ৯২ একর খাস জমি অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) হস্তান্তর করেছে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন। সম্ভাবনা যাচাই করতে ভুটানের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছেন। কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর হয়ে ভুটানের ফুন্টশোলিং এলাকার দূরত্ব কম। সহজে যাতায়াত করা যায়। ফলে ভুটানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হলে জেলার আর্থ সামাজিক অবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে মনে করেন অর্থনীতিবিদেরা।
কুড়িগ্রাম জেলা সদরের ভোগডাঙা ইউনিয়নের মাধবরাম মৌজার অন্তর্ভুক্ত ১৩৩ দশমিক ৯২ একর খাস জমি অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) হস্তান্তর করেছে জেলা প্রশাসন। ধরলা ব্রিজের পূর্ব প্রান্তে সৈয়দ ফজলুল করিম (রহ.) জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার উত্তর-পূর্ব দিকে এইসব খাস জমির অবস্থান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে এক জনসভায় কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে ধরলা ব্রিজের পূর্বে কুড়িগ্রাম-ভূরুঙ্গামারী সড়কের পূর্ব পাশে অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ১৩৩ দশমিক ৯২ একর খাস জমি বেজা কর্তৃপক্ষের কাছে বন্দোবস্ত দিয়েছি।’ আরও ৮০ একর জমি ব্যক্তি মালিকানাধীন রয়েছে সেটি দ্রুত অধিগ্রহণের মাধ্যমে বেজা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে জানান তিনি।
এদিকে ২০২৩ সালের মে মাসে লন্ডনে ভুটানের রাজা ও রানির সঙ্গে এক দ্বিপক্ষীয় সভায় কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভুটান সরকারের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছেন। আগামীকাল ১০ ও ১১ মার্চ তারা কুড়িগ্রামে অবস্থান করে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সম্ভাবনা যাচাই করবেন। চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনসিল। এমসয় বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন ভুটানের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেছেন, যে দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বাংশে কানেক্টিভিটি বা সংযোগ আগের চেয়ে অনেকটাই বেড়েছে। কুড়িগ্রামের সঙ্গে ভারত ও ভুটানের কানেক্টিভিটি বেশ ভালো। বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল, কাঁচামাল তৈরির সম্ভাবনা এবং মানবসম্পদ মিলিয়ে কুড়িগ্রামে যৌথ অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে বলে সরকার মনে করছে।