আজিজুর রহমান দুলালঃ ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় নিখোঁজ হওয়ার মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে ৭ বছর বয়সী এক শিশুর মরদেহ গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধারের ঘটনায় স্থানীয় থানায় মামলা হয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনার প্রতিবাদ ও আসামীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে রবিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে এলাকাবাসী, নিহত শিশুর পরিবার এবং স্কুলের শিক্ষার্থীরা এক বিশাল মানববন্ধন করেছে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামের গ্রীস প্রবাসী পলাশ মোল্লার ছেলে জায়ান মোল্যা (৭) স্থানীয় একটি কিন্ডার গার্ডেনের শিশু শ্রেণির ছাত্র ছিল।

থানা ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্কুল থেকে বাড়ি আসার পর জায়ান নিখোঁজ হয়। শিশুটির মা ও পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করলে প্রায় দুই ঘণ্টা পর পথচারীদের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, তাদের বাড়ির কাছেই একটি বাগানের গাছে তার পরনের প্যান্ট দিয়ে গলা পেঁচানো অবস্থায় তার মরদেহ ঝুলছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার বিকেলে শিশুটির দাফন সম্পন্ন হয়।
এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতেই শিশু জায়ানের মা, কামরুন্নাহার সিনথিয়া, বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে আলফাডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা (মামলা নং-০৯) দায়ের করেছেন।
আজ রবিবার দুপুরে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল আলম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে এবং তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে সেই অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন বিশ্বাস, আশা প্রকাশ করে বলেছেন যে দ্রুতই এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হবে।

রবিবার সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় জাভেদ পারভেজ মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা, এলাকাবাসী ও জায়ানের পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়ে মানববন্ধন করেন। তাদের প্রধান দাবি ছিল দ্রুত হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা।
মানববন্ধনে নিহত জায়ানের মা কামরুন্নাহার সিনথিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রশাসনের কাছে তীব্র আকুতি জানান। তিনি বলেন, ”আমার একমাত্র ছেলেকে যারা খুন করেছে, তারা বীরদমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর আমার ছেলে কবরে শুয়ে আছে। প্রশাসনের কাছে আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই, হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।”
তিনি যত দ্রুত সম্ভব হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
