নৌকা প্রতীকের কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম।
তিনি বলেন, গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। আমাদের দল ক্ষমতায় থাকার পরও যদি আমাদের নেতাকর্মীর ওপর হামলা অত্যাচার চলতে থাকে তাহলে আমরা বসে থাকবো না। যারা অরাজকতা করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করছে এবং নৌকার কর্মীদের টার্গেট করে হামলা, মারধর করছে আমরা তাদের তালিকা করছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ যদি এসব আসামিদের গ্রেপ্তার না করে বা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নেয়, পুলিশ প্রশাসন যদি চুপ করে বসে থাকে তাহলে আমরাই নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে নামবো এবং সিংগাইর-হরিরামপুরের জনগণকে সাথে নিয়ে আসামিদের বাড়ি ঘেরাও করব, এটাই আমাদের কর্মসূচি।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নে নির্বাচন পরবর্তী পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মমতাজ বলেন, নির্বাচনের পর থেকে বিজয়ী জাহিদ আহমেদ টুলুর কর্মী-সমর্থকরা আমার নৌকার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা করছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন কর্মীকে মারধরসহ তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করেছে। তার নেতাকর্মীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এসব ঘটনায় সিংগাইর ও হরিরামপুর থানায় বেশ কয়েকটি মামলাও করেছি। কিন্তু আজকে পর্যন্ত জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নিতে বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন।
কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জনগণের জন্য আমি খাটতে রাজি আছি। আমার যদি মোকাবিলা করতে হয়, রাজপথে দাঁড়িয়ে মোকাবিলা করব। জেল-জুলুম অত্যাচার কোনো কিছু আমাকে দাবায়ে রাখতে পারবে না। আপনাদের সাথে রাজপথে হাঁটার মানুষ আমি। আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মারধর অব্যাহত থাকলে আমরা ঘরে বসে থাকব না।
নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে দাবি করলেও মমতাজ বেগম বলেন, আমার নিজ নির্বাচনী তিনটি ইউনিয়নে অস্বাভাবিক ভোট দেখানো হয়েছে। কালো টাকা দিয়ে বিএনপির ভোট কিনে অস্বাভাবিক ভোট দেখানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনজীবীদের সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব। এ অস্বাভাবিক ভোটের কাছেই আমাকে পরাজিত হতে হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য হন মমতাজ বেগম। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে সদ্য শেষ হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়েও নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে ৬ হাজার ১৭১ ভোটে পরাজিত হন মমতাজ বেগম।