April 25, 2024, 9:18 pm

‘দেশে খেলাপি ঋণ ৪১ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা, সিংহভাগ জনতায়’

  • Last update: Sunday, September 6, 2020

গত অর্থবছর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকায়, যার সিংহভাগই জনতা ব্যাংকের গ্রাহকদের কাছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

রোববার জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে টেবিলে উত্থাপিত এক প্রশ্নের জবাবে এ উত্তর আসে।

জাতীয় পার্টির মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মোট এক লাখ ৮২ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে খেলাপির পরিমাণ ৪১ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা।

এর মধ্যে জনতা ব্যাংকের ১৫ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা, সোনালী ব্যাংকের আট হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংকের সাত হাজার ১৫৬ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের পাঁচ হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের চার হাজার ৯০ কোটি টাকা ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (বিডিবিএল) ৫৫৮ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ রয়েছে।

মন্ত্রী জানান, খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলো বিকল্প-বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি ব্যবহার করছে। এক্ষেত্রে সফল না হলে মামলা দায়ের করা হচ্ছে।

তার তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ বছরে (২০১৫-২০১৯) সোনালী ব্যাংক পাঁচ হাজার ৩০৫ কোটি ২৯ লাখ, জনতা ব্যাংক দুই হাজার ৮৬১ কোটি ৬৩ লাখ, অগ্রণী ব্যাংক দুই হাজার ৯৫৫ কোটি ৩৪ লাখ, রূপালী ব্যাংক এক হাজার ৮৫ কোটি ৩০ লাখ, বেসিক ব্যাংক ৮৮০ কোটি ৮৬ লাখ ও বিডিবিএল একহাজার ৭১ কোটি ৮ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করেছে।

ফেনী-২ আসনের নিজাম উদ্দিন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ১ জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত মোট ১৪ হাজার ৫৬০ কোটি ৭৬ লাখ টাকার ঋণ মওকুফ করেছে।

বগুড়া-৫ আসনের হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বর্তমানে আমদানি পর্যায়ে ১৬ হাজার ১টি শুল্ক মামলার বিপরীতে অনাদায়ী রাজস্বের পরিমাণ সাত হাজার ৫৮৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

বিএনপির হারুনুর রশীদের প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত সাত হাজার ৫৫৫ দশমিক ৭৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তার প্রদানে ভারত ও বাংলাদেশ ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

“৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত ৯০৪ দশমিক ৭৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ ছাড় হয়েছে। তবে এই অর্থনৈতিক গতি মূলত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সরকারের মেয়াদেই গতি লাভ করেছে। বর্তমান সরকারের সময়ে তিনটি এলওসি চুক্তির আওতায় সাত দশমিক ৫৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ সকল ঋণের আওতায় অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। যা আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ব্যক্তিখাতের দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করেছে।”

জামালপুর-৫ আসনের মোজাফ্ফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমদানি-রপ্তানিতে অবমূল্যায়ন ও অতি মূল্যায়নের মাধ্যমে মুদ্রা পাচারের কথা আমরা পত্র-পত্রিকায় প্রায়ই দেখতাম। এ সংক্রান্ত অভিযোগ আজকাল আর শুনি না। তবে সুনির্দিষ্ট মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ পাওয়ার ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিয়মিতভাবে তা খতিয়ে দেখছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।“

‘সরকারের হস্তক্ষেপে পুজিবাজার ঊর্ধ্বমুখী’

সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে করোনাভাইরাস পরবর্তীতে পুঁজিবাজারে শেয়ারমূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান।

চট্টগ্রাম-১১ আসনের এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি মন্ত্রী বলেন, “পুঁজিবাজারে সিকিউরিটিজের মূল্য হ্রাস-বৃদ্ধি হওয়া সারা বিশ্বব্যাপী একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারীর প্রেক্ষাপটে সারা বিশ্বে পুঁজিবাজারের অস্বাভাবিক দরপতনের প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের লেনদেনও এর ব্যতিক্রম নয়। ওই সময়কালে পুঁজিবাজারের লেনদেনও সাময়িকভাবে বন্ধ ছিলে।

‍“করোনা পরবর্তীতে পুঁজিবাজার খোলার পর থেকে সরকারের নেওয়া কিছু পদক্ষেপের ফলে বাজারে বর্তমান শেয়ার মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।”

এসময় পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা তথা উন্নয়নের স্বার্থে এবং অস্বাভাবিক দরপতন রোধে সম্প্রতি নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন মন্ত্রী।

এর মধ্যে শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস সম্পর্কিত নির্দেশনা, পুজিবাজার উন্নয়নে গত জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক, শেয়ারের বিপরীতে লভ্যাংশ ঘোষণা সংক্রান্ত নীতিমালা জারি, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন ও পুজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির পদক্ষেপ উল্লেখযোগ্য।

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC