March 29, 2024, 2:06 pm

তিন ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা

  • Last update: Monday, August 9, 2021

দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হলে গত ১৭ মার্চ বন্ধ হয়ে যায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রায় ১৭ মাস বন্ধ রয়েছে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কয়েক দফা ছুটি বাড়ানোর পর আবারও গত ২৯ জুলাই এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বৃদ্ধি করা হয়।

তবে এবার সেপ্টেম্বর মাস থেকে ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। নভেম্বর-ডিসেম্বরে এসএসসি পরীক্ষা ছাড়া এ পরিকল্পনা থেকে স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বাদ রাখা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের এ পরিকল্পনার বাইরে রাখার পেছনে যুক্তি হলো-চলতি শিক্ষাবর্ষ প্রায় শেষ। সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও অর্ধবার্ষিক, বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে না। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলার বিষয়ে আগাম ও আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ কিছু বলতে চাইছেন না।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, যতদূর সম্ভব শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের করোনার টিকার আওতায় আনার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মূলত এই টিকাপ্রদানের ওপর ভিত্তি করেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা করছে সরকার।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সব পরিকল্পনা নির্ভর করছে আগামী এক মাসে কত সংখ্যক শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা যায় তার ওপর।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর স্থগিত থাকা পরীক্ষাগুলো আগে নেওয়া হবে। এরই অংশ হিসেবে দুদিন পরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচ্ছন্ন করতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সর্বস্তরের শিক্ষকদের টিকাদান কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নিতে টাইমলাইন দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার কাজও চলছে জোরেশোরে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি গণমাধ্যমকে জানান, সরকারি পর্যায়ের প্রায় শতভাগ শিক্ষকই টিকা নিয়েছেন। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তিন লাখ ৬৩ হাজার ২২২ শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে টিকা নিয়েছেন দুই লাখ ৭৮ হাজার ৪২৬ জন। বাকি আছেন প্রায় ৮৪ হাজার জন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪ হাজারের বেশি শিক্ষক টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন, তাদের মধ্যে টিকা নিয়েছেন ৩০ হাজারের বেশি। আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই সব শিক্ষকই টিকা নিয়ে নেবেন আশা করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ লাখ ৭৯ হাজার ২৬১ শিক্ষার্থী টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন।এর মধ্যে প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন ৭৯ হাজার ৯১৪ জন। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ছয় হাজার ৭২ জন। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে নভেম্বরে এসএসসি, ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে আটকে থাকা স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো আগে শেষ করা। এরপর আটকে থাকা স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার দিকে এগুতে চায় সরকার। এরপর কলেজ ও তারপর বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার চিন্তা রয়েছে সরকারের।

সম্প্রতি শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের একটি অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ১৭ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছি আমরা। করোনার এখন যে সংক্রমণ চলছে সেটা কমে এলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা স্কুলগুলো খুলে দিতে চাই।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, বাচ্চাদের নিরাপত্তা আমাদের কাছে সবার আগে। তাই সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া শেষ হলেই অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া শুরু হবে। অনাবাসিক শিক্ষার্থী যারা প্রথম বা দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে, তাদের অনেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। তাদের স্টুডেন্ট আইডি কার্ড নম্বরের মাধ্যমে টিকা দেওয়া যায় কি-না, সে ব্যাপারেও আলাপ-আলোচনা চলছে।

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ
© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC