এনামুল হক রাশেদী, চট্টগ্রামঃ কবি আরিফ চৌধুরীর ৬০ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ‘চট্টগ্রাম কবিতা পরিষদ’ কবি সম্বর্ধনা, এক জিবনের পদচিহ্ন সম্মাননা স্মারকের মোড়ক উম্মোচন ও কথামালা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
১৭ জানুয়ারি’২৪ ইং বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম একাডেমির ফয়েজ নুর নাহার হল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লেখক ও প্রকাশক শাহ আলম নিপু। লায়ন লুবনা হুমায়ুন সুমির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কবি প্রাবন্ধিক ও ‘এক জীবনের পদচিহ্ন’ গ্রন্থের সম্পাদক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম। প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষক, গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি অধ্যাপক ফাউজুল কবির, কবি এবিএম ফয়েজ উল্লাহ, গবেষক মুহাম্মদ নিযামুদ্দিন, কবি নাজিমুদ্দীন শ্যামল, লেখক ও সাংবাদিক কামাল উদ্দিন।
কথামালা আয়োজনে বক্তব্য রাখেন কবি কুতুবউদ্দিন বখতেয়ার, সাংবাদিক মাহবুব পলাশ, কবি মাঈনুদ্দীন জাহেদ, কবি সাঈদুল আরেফীন, কবি জিতেন্দ্রলাল বড়ুয়া, জসীম উদ্দিন চৌধুরী, কবি নজরুল ইসলাম, গীতিকার আব্দুল হাকিম, সাংবাদিক স, ম, জিয়া, কবি ও অধ্যাপক আবু জাফের সাঈদ, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, কবি ও মুক্তিযোদ্ধা শুক্কুর চৌধুরী, সাংবাদিক ইলিয়াস রিপন, কবি আলমগীর হোসেন, আবদুল্লাহ মজুমদার, কবি মিনহাজুল ইসলাম মাসুম, সাংবাদিক সুপলাল বড়ুয়া, ফারজানা ফয়েজী, ইমরান সোহেল আসিফ চৌধুরী, মোহাম্মদ শোহায়েব উল্ল্যাহ সহ প্রমুখঃ।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অধ্যাপক ডঃ ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সমাজে গুণীকে সম্মান দিলে এবং সম্মান দেওয়ার ধারা চলমান থাকলে এই ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন হবে, সমাজে অবক্ষয় রোধ হবে এবং মানুষ সৃজনশীল কর্ম কান্ডের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে সমাজকে জাগ্রত করবে, এই সমাজে শান্তি ফিরে আসবে, সমাজ এগিয়ে যাবে। তিনি আরিফ চৌধুরী’র ৬০ তম জম্মদিনে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
কবি ও প্রাবন্ধিক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, কবিরা জীবন এবং প্রকৃতিকে প্রতিনিয়ত হৃদয়ে লালন করেন তারা জীবন-প্রকৃতি ও সমাজকে গভীরভাবে দেখেন। নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও কবিরা কাব্যসাধনা করেন ও একমাত্র কবির হৃদয় সব সময় সৃষ্টিশীলতার সম্পদে ভরপুর থাকে। একজন কবির জাগতিক কোন সম্পদ থাকে না। ন্যায়ের প্রশ্নে কবিরা কোন কালে কোন আপোস করেন না। কবিরা সব সময় মুক্ত চিন্তা করেন। কবিরা অধরা অনুভূতিকে কবিতার শৈল্পিক অভিজ্ঞানে তুলে আনেন মননের নিভৃত নির্জনতায়। কবি কবিতার ভেতর দিয়ে সমাজপরিবর্তনের প্রয়াস তারা প্রগাঢ়ভাবে শব্দের কৌশলে বিন্যাস করেন ভাষার কায়ায়, অপ্রমেয় ব্যাপ্তির অভিনবত্বের ইঙ্গিতে নিজস্ব ব্যঞ্জনায়। তিনি কবি আরিফ চৌধুরীকে তার জম্মদিনে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান।
কবি আরিফ চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, কবিতা সব সময় এক আশাবাদের স্পন্দন জাগায়। গত তিন দশকের অধিক কাল পেরিয়ে কবিতাকে ধারন করে নিজের মনন চিন্তায় উজ্জ্বল আলোয় সুন্দরের তপস্যায় তিনি মগ্ন ছিলেন এবং একটি সপ্রতিভ নিজস্বতা কবিতার ক্ষেত্রে গড়ে তুলতে চেষ্টা করেছেন বলে জানান।
কবি অধ্যাপক ফাউজুল কবির বলেন, কবিরা মানুষের প্রকৃত জীবন বোধকে জাগ্রত করে এই সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেন। মানুষের সুখ, দুঃখ, মুক্তির কথা বলেন। মানুষের অন্তর্নিহিত সৌন্দর্যবোধ সৌন্দর্য চেতনাকে উজ্জীবিত উচ্ছ্বসিত উদ্ভাসিত করে দেশের কল্যানে প্রকৃত সত্যকে তুলে ধরে এই দেশের মানুষকে জাগ্রত করেন।
কবি ও গবেষক এবিএম ফয়েজ উল্লাহ বলেন, কবি আরিফ চৌধুরী একাধারে কবি ও প্রাবন্ধিক। লিটল ম্যাগাজিন জগতের অন্যতম সারথি। মানবজীবনের সুখ, দুঃখ, বিরহ বেদনা, হাসি কান্না ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তার কবিতার মুখ্য বিষয়।
বেশির ভাগ ব্যক্তি সমালোচনা করে ভয় পায়।সমালোচনা যে নিন্দা নয় সেটা অনেকেই বুঝতে চান না। যারা প্রকৃত যোদ্ধা তারা ঠিকই বুঝেন। অকারন, অতিরিক্ত প্রশংসা নিন্দার নামান্তর বলে জানান কবি ও গবেষক মোহাঃ নিযামুদ্দীন।
মুক্তিযোদ্ধের চেতনা ধারন করে সভ্যতা, সংস্কৃতির মানকে উন্নত করে মানব চিত্তের চেতন, অবচেতন, অচেতন অবস্থার মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করে সমাজের বাস্তবচিত্র তুলে ধরে এর বাস্তব সম্মত সমাধান, দিক নির্দেশনা এদেশের কবি লেখকদের লেখায় ফুটিয়ে তুলতে হবে বলে জানান কবি নাজিমুদ্দীন শ্যামল।
লেখক ও সাংবাদিক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, বয়স কেউ কখনো ধরে রাখতে পারে না এটি নিয়তির খেলা। কবি আরিফ চৌধুরী লেখালেখিতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। তিনি সাহিত্যের মাঝে বেঁচে থাকবেন বলে জানান তিনি।
সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লেখক ও প্রকাশক মোঃ শাহ আলম নিপু এই সুন্দর আয়োজনের জন্যে ও সকল কে সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ জানান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।