কেউ কথা রাখেনি, অবহেলিত কান্দারগাঁওয়ে পাকা রাস্তার দাবি পূরণ হবে তো?

সোলায়মান হাসান, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের উন্নয়ন বঞ্চিত ও চরম অবহেলিত একটি জনপদের নাম কান্দারগাঁও গ্রাম। এই গ্রামের বাসিন্দা রাজু আহমাদ আক্ষেপ করে বলেন, কতো জনপ্রতিনিধি আশা দিয়েছে কিন্তু কেউ কথা রাখেনি। চরম দুর্ভোগ আমাদের নিত্যসঙ্গী। বর্ষা মৌসুমে তা চরম দশায় পরিনত হয়। অনেকই সোসাল মিডিয়াতে এই সমস্যা নিয়ে বহুবার পোস্ট করেছেন। কত নিউজ হয়েছে, কাজের কাজ হয়নি কিছুই।

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানায় মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠা গ্রাম কান্দারগাঁও পিরোজপুর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। এই গ্রামটির দুটি অংশে বিভক্ত। পশ্চিমপাড়া পরেছে ৭ ওয়ার্ডে ও পূর্বপাড়া পরেছে ৮ ওয়ার্ডে।

গ্রামবাসী বলেন, যতটুকু মনে পরে বিগত প্রায় ২১ বছর আগে ততকালীন বিএনপির শাসন আমলে অধ্যাপক রেজাউল করিম এমপি থাকাকালীন সময় জনাব রফিকুল ইসলাম বিডিআর চেয়ারম্যান আমাদের রাস্তার মাটি ভরাটের কাজ করেন। তারপর এমপি হিসেবে ৫বছর কাটিয়ে গেছেন কায়সার হাসনাত। উনি নির্বাচনের পূর্বে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নির্বাচনে জয়ী হলে ওনার প্রথম কাজই হবে কান্দার গাঁওয়ের রাস্তা পাকা করে দিবেন। কিন্তু কথা রাখতে পারেননি।

তারপর দুই দুইবার সোনারগাঁয়ে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন লিয়াকত হোসেন খোকা কিন্তু তিনিও কিছু করেননি। আমাদের রাস্তার আগের।অবস্থাই রয়ে গেছে।

পিরোজপুর ইউনিয়ন এর দুই দুইবারের সফল চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম সাহেব। উনি কান্দারগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে কথা দিয়ে গিয়েছিলেন ডিসেম্বর মাসে সরকারি অনুদান না পেলেও নিজের টাকায় কান্দারগাঁও গ্রামের রাস্তার কাজ করে দিবেন। এপর্যন্ত কতো ডিসেম্বর গেলো কিন্তু উনির ডিসেম্বর মাস আসেও না রাস্তার কাজও হয় না।
তারপর বলতে হয় আমাদের পিরোজপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের তিন তিনবারের মেম্বার জনাব মোশাররফ হোসেনের কথা। সবাই কিন্তু নির্বাচনের পূর্বে প্রচারণার সময় পোস্টারের নিচে লিখে দেন জনগণের সেবা করার সুযোগ দিন। এখন প্রশ্ন হলো তাহলে পূর্ব ও পশ্চিম কান্দারগাঁও গ্রামের মানুষ জন্য কি বাংলাদেশের জনগণের আওতাভুক্ত না? তাহলে আমরা সেবা পাচ্ছি না কেন?

যাদের নাম আমি বললাম, ব্যক্তিগত ভাবে কারোর সাথেই আমার পরিচয় বা শত্রুতা নেই। শুধু মাত্র মনের আক্ষেপ থেকে বলা।

এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় পড়ুয়া কোমলমতি শিশুদের যাতায়াতে অসুবিধা হয়। ছাত্র ছাত্রী কিংবা গ্রামের মানুষ জন কিছুটা বৃষ্টি হলেই পায়ের জুতা হাতে নিয়ে রাস্তা পাড়ি দিতে হয়। মানুষের হাটা চলাচলও অনেক ক্ষেত্রে কস্ট সাধ্য হয়ে যায়। নামাজ পড়তে আসতে পারে না মুসুল্লিরা। ফলে মুসুল্লি শূন্য হয়ে পড়ে মসজিদ। কারোর বাড়িতে মেহমান আসলে তাদের সামনে লজ্জিত হতে হয়। মেহমানরা প্রশ্ন করে এই গ্রামে কি মানুষ বাস করে?

আপনাদের কি চেয়ারম্যান মেম্বার নাই? তাদের কি চোখে পড়ে না আপনাদের এই দুরঅবস্থার দিকে?
গর্বভতী কোন মহিলাকে হাসপাতালে নিতে বা আনতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কোন মুমূর্ষু পুরুষ বা মহিলাকে হাসপাতালে নিতে হলে মসজিদের খাটিয়া ব্যবহার করতে হয় আমাদের এই ডিজিটাল বাংলাদেশে। আমরা নাকি আবার স্মার্ট হয়ে যাচ্ছি! আবার কেই হাসপাতালে মারা গেলেও মৃত ব্যক্তির লাশ বাড়িতে ফেরত আনতে মসজিদের খাটিয়া বা মেঘনা নদীর কাছাকাছি যারা আছে তাদের ব্যবহার করতে হয় ট্রলার বা নৌকা। রাস্তা যেহেতু নেই সেহেতু এম্বুল্যান্স সুবিধা পাওয়া তো আমাদের জন্য স্বপ্নের মতো।

যদিও দেশের সর্বত্র উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমরা কেন উন্নয়ন এর আওতায় আসতেছিনা ?.আপনাদের মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বিনিত আবেদন আমাদের রাস্তার পাকাকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

এই ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোশারফ হোসেন বলেন, আমি বহুবার এই এলাকার রাস্তার কাজ করার চেষ্টা করেও পারি নাই। পিরোজপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেনের বাধারমুখে তা বন্ধ হয়ে যায়।

Facebook Comments Box
Share: