March 29, 2024, 8:53 pm

করোনাভাইরাসের ৫০ নমুনার জিন বিশ্লেষণ, ৮০% ভারতে পাওয়া ডেল্টা

  • Last update: Saturday, June 5, 2021

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আইদেশি মিলে মধ্য মে থেকে যেসব করোনাভাইরাসের জেনোম সিকোয়েন্স করেছে, তার ৮০ শতাংশেই মিলেছে এ ভাইরাসের ভারতে পাওয়া ধরনটি, যার নাম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দিয়েছে ‘ডেলটা’।

ইতোমধ্যে রাজধানী ঢাকাতেও করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ওই ধরনটি পাওয়া গেছে। আক্রান্তদের ইতিহাস পর্যালোচনা করে আইইডিসিআর মনে করছে, ইতোমধ্যে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের ‘ডেলটা’ ধরনটির সামাজিক বিস্তার বা কমিউনিটি ট্রান্সমিশন ঘটেছে, যা উদ্বেগজনক। গত দেড় বছর ধরে বিশ্বজুড়ে ত্রাসের রাজস্ব চালিয়ে যাওয়া করোনাভাইরাস রূপ বদলাচ্ছে ক্রমাগত। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে এর বেশ কয়েকটি ‘মিউট্যান্ট’ বা পরিবর্তিত ধরন পাওয়া গেছে, যেগুলো অনেক বেশি সংক্রামক।

এর মধ্যে ভারতে গত বছরের শেষ দিকে একটি নতুন ধরন শনাক্ত হয়, যাকে এ বছর দেশটিতে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে রেকর্ড সংক্রমণ ও মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করা ভাইরাসের এ ধরনটির আনুষ্ঠানিক নাম বি.১.৬১৭। তবে আলোচনার সুবিধার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে বলছে ‘ডেলটা’। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইটে এ ধরনটিকে ‘ভ্যারিয়েন্টস অব কনসার্ন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ভারত থেকে আসা তিন বাংলাদেশির দেহে করোনাভাইরাসের এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের কথা গত ৮ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছিল। এরপর গত ১৬ মে থেকে এ পর্যন্ত মোট ৫০টি নমুনার জেনোম সিকোয়েন্স করেছে আইইডিসিআর এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আইদেশি।

আইইডিসিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, জিন বিন্যাস বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এসব নমুনার মধ্যে ৪০টি ছিল ভারতে পাওয়া ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট, যা মোট নমুনার ৮০ শতাংশ।

এছাড়া আটটি বেটা ভ্যারিয়েন্ট (সাউথ আফ্রিকায় পাওয়া ধরন, বি.১.৩৫১), একটি সার্কুলেটিং স্ট্রেইন এবং একটি আনআইডেন্টিফাইড ভ্যারিয়েন্ট (বি.১.১.৩১৮) পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে আইইডিসিআর।

এসব নমুনার মধ্যে চারটি সংগ্রহ করা হয়েছিল ঢাকায় আক্রান্ত রোগীদের নমুনা থেকে। জেনোম সিকোয়েন্স তার মধ্যে দুটি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় আসা ৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ওই ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে আইইডিসিআর।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এখন পর্যন্ত যাদের মধ্যে শরীরে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে, তাদের ৩৫ শতাংশেরই বাংলাদেশের বাইরে ভ্রমণ বা বিদেশ থেকে আসা কারও সংস্পর্শে যাওয়ার ইতিহাস মেলেনি। এ কারণে বাংলাদেশে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হয়েছে বলে আইইডিসিআর মনে করছে।

আইইডিসিআর বলছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সংগ্রহ করা ১৬টি নমুনার মধ্যে ১৫টি এবং গোপালগঞ্জ থেকে সংগ্রহ করা সাতটি নমুনার সবকটিই ছিল ডেল্টা।

ভারত থেকে আসা তিনজন বাংলাদেশি নাগরিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে খুলনায় ও চুয়াডাঙ্গায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। তারা দেশের অন্য জেলার বাসিন্দা, তাদের নমুনাতেও করোনাভাইরাসের ওই ধরনটি মিলেছে।

রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে ভারত সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ গত কিছুদিন ধরেই উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এ অবস্থায় এই ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সবাইকে অনুরোধ করেছে আইইডিসিআর।

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ
© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC