March 29, 2024, 6:58 pm

একই পরিবারের চার সদস্যকে হত্যার দায়ে রায়হানুলের মৃত্যুদণ্ডের রায়

  • Last update: Tuesday, September 14, 2021

আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষূীরা জেলা থেকেঃ কলারোয়ার খলিসা গ্রামে স্বামী-স্ত্রী ও তাঁদের দুই সন্তানসহ একই পরিবারের চারজনকে হত্যার ঘটনায় একমাত্র আসামী রায়হানুল ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার পোনে ২টায় সাতক্ষীরার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান জনাকীর্ণ আদালতে আসামীর উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। একই আদেশে আসামীকে সাত দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিলের জন্য সময় দেওয়া হয়েছে।ফাঁসির দন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী রায়হানুল ইসলাম (৩৬) কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিষা গ্রামের প্রয়াত ডা: শাহাজাহান আলীর ছেলে।

এর আগে, এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম দীর্ঘ তদন্ত শেষে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি আসামী রায়হানুলের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। একই সাথে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসাদুল, রাজ্জাক ও আব্দুল মালেককে এ মামলা থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়। এ মামলার একজন সাফাই স্বাক্ষীসহ ১৮ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গতকাল আসামী রায়হানুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার আদেশ দেন। এদিকে, এ মামলার রায় শোনার পর রায়হানুলের স্বজনরা আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

চাঞ্চল্যকর এ মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী পিপি এড. আব্দুল লতিফ বলেন, যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মাধ্যমে আদালত আসামী রায়হানুলকে দোষী সাব্যস্ত করতে সক্ষম হয়েছি বলে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এটি যুগান্তকারী রায় হয়েছে। এই রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন তিনি।
তবে, আসামী পক্ষের আইনজীবী এসএম হায়দার ও এড. ফরহাদ হোসেন এ রায়ে সন্তুষ্ট নন বলে জানান। তারা বলেন, আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল দায়ের করবো। আশা করি সেখানে আমরা ন্যায় বিচার পাবো।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ভোর রাতে কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামের প্রয়াত ডা. শাহাজান আলীর ছেলে মৎস্য হ্যাচারী মালিক শাহিনুর, তাঁর স্ত্রী সাবিনা খাতুন, ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী ও মেয়ে তাসনিম সুলতানাকে পারিবারিক কলহের জের ধরে চেতনা নাশক ওষুধ খাইয়ে একে একে জবাই করে হত্যা করে তার আপন ভাই রায়হানুল। পরদিন লোমহর্ষক এ ঘটনায় কলারোয়া থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত শাহিনুরের শাশুড়ি কলারোয়ার ওফাপুর গ্রামের রাশেদ গাজির স্ত্রী ময়না বেগম।

মামলায় তিনি কারো নাম উল্লেখ না করেই বলেন, কে বা কারা ওই চারজনকে গলাকেটে হত্যা করেছে। মামলা নং-১৪, তারিখ-১৫-১০-২০২০। এ মামলায় সন্দিগ্ধ আসামী হিসেবে শাহীনুরের ভাই রায়হানুল, একই গ্রামের রাজ্জাক দালাল, আব্দুল মালেক ও ধানঘরা গ্রামের আসাদুল সরদারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত রায়হানুলকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ২১ অক্টোবর আদলাতে একাই হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। একই সাথে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসাদুল, রাজ্জাক ও আব্দুল মালেককে এ মামলা থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়। তবে, এ নারকীয় হত্যাকান্ডের মধ্যে ঘাতকের হাত থেকে জীবনে বেঁচে যায় তাদের চার মাসের শিশু কন্যা মারিয়া সুলতানা। শিশুটি বর্তমানে হেলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য নাসিমা খাতুনের হেফাজতে রয়েছে।

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ
© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC