সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৫৪তম জাতীয় দিবস এবারও প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে পরিণত হয়েছে এক বর্ণিল মিলনমেলায়। স্থানীয় নাগরিকদের মতোই বাংলাদেশি প্রবাসীরাও বিপুল উৎসাহ–উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করেছেন। আবুধাবি, দুবাই, শারজাহ, আজমান, রাস-আল-খাইমা, ফুজিরাহ ও আল-আইন—পুরো দেশজুড়েই ছিল আলোকসজ্জা, শোভাযাত্রা ও নানা আয়োজনের রঙিন ছোঁয়া।
এবারের জাতীয় দিবস উপলক্ষে এনটিভি ইউএই দর্শক ফোরাম আয়োজন করে একটি স্মরণীয় ফ্যামিলি পিকনিকের, যেখানে প্রায় ৬০০ বাংলাদেশি প্রবাসী অংশ নেন। রাস আল খাইমাহের সাকার পার্কে দিনব্যাপী চলা এই আয়োজন পরিণত হয় এক প্রাণবন্ত উৎসবে। সকাল থেকে শুরু হওয়া পতাকা র্যালি, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, শিশু-কিশোরদের প্রতিযোগিতা, নারীদের গেম শো এবং পুরুষদের বিভিন্ন খেলাধুলা পুরো পরিবেশকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে আড্ডা, গান আর হাসি-আনন্দে দিনটি যেন হয়ে ওঠে এক টুকরো বাংলাদেশ।

ইউএই–এ বসবাসরত বাংলাদেশি পরিবারের উপস্থিতি পিকনিকটিকে রঙিন করে তোলে। খাবার পরিবেশন থেকে শুরু করে প্রতিটি সেগমেন্ট পরিচালনায় ছিল এনটিভি ফোরামের সদস্যদের আন্তরিকতা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাইয়ের প্রথম সচিব (প্রেস) মোঃ আরিফুর রহমান এবং দ্বিতীয় সচিব (এনআইডি) আব্দুল্লাহ আল মামুনুর রশীদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোঃ আরিফুর রহমান বলেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ে অবশ্যই নিবন্ধন করা জরুরি। তিনি এনটিভি ফোরামের এই সুন্দর ও সুশৃঙ্খল আয়োজনকে প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও এমন উদ্যোগ অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা জানান।
আয়োজনে সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন এনটিভি ইউএই ফোরামের সভাপতি মোহাম্মদ রাজা মল্লিক এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নাজমুল হক। পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন সকল সহ সভাপতি গন, সম্পাদক গন ও তাদের সহধর্মিনি রা।

প্রবাসীরা জানান, আমিরাত তাদের দ্বিতীয় ঘর। এখানে কাজ–বাণিজ্যের পাশাপাশি সন্তানদের পড়ালেখা, দেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স প্রেরণ—সব মিলিয়ে এই দেশের সঙ্গে রয়েছে তাদের মনের গভীর টান। তাই আমিরাতের জাতীয় দিবস উৎসবে অংশগ্রহণ করা তাদের কাছে অনন্য অভিজ্ঞতা। তারা আরও বলেন, দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে এমন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক আয়োজন নিয়মিত হওয়া উচিত।
এদিকে আমিরাতজুড়ে জাতীয় পতাকা ও বর্ণিল আলোকসজ্জায় সেজে ওঠে প্রধান সড়ক, শপিংমল, সুউচ্চ ভবন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা। জাতীয় দিবস উপলক্ষে সরকার চার দিন এবং বেসরকারি খাতে দুই দিনের ছুটি ঘোষণা করে। বিভিন্ন স্থানে জমকালো ফায়ারওয়ার্ক রাতকে রাঙিয়ে তোলে।
দিনের শেষে শিশুদের প্রতিযোগিতা, নারী-পুরুষদের খেলাধুলার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সর্বশেষ র্যাফেল ড্রয়ের মাধ্যমে পাঁচজন সৌভাগ্যবান অংশগ্রহণকারীকে দেওয়া হয় আকর্ষণীয় উপহার।
উৎসব, মিলনমেলা আর আনন্দঘন পরিবেশে এবারের ইউএই জাতীয় দিবস প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য রেখে গেলো এক অবিস্মরণীয় স্মৃতি।
