বাসুদেব বিশ্বাস, বান্দরবান: বান্দরবানে কয়েকদিনের তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বান্দরবানের জনজীবন। এ অবস্থায় বাড়ছে নানা ধরনের রোগব্যাধি।শীতের প্রকোপে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে শীতের কারণে হাসপাতালে বেড়েছে জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার রোগীর সংখ্যা।
১০০ শয্যার বান্দরবান সদর হাসপাতালে প্রতিদিনই গড়ে ২০০ থেকে ২৫০ জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে, পাশাপাশি নানা ধরনের রোগ নিয়ে রোগী ভর্তি হচ্ছে। এদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি।
বান্দরবান সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১০০ শয্যার বান্দরবান সদর হাসপাতালে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে রোগী ভর্তি ছিল ৪৫.৮ শতাংশ আর ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে রোগী ভর্তি ছিল ৬০.২ শতাংশ আর সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী বান্দরবান সদর হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। যদিও ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসেই রোগী ভর্তি
হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা যায়, শুক্র ও শনিবার বহির্বিভাগ বন্ধ থাকায় রোববার প্রচুর রোগী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে এবং তাদের প্রত্যেককে সরকারি বিভিন্ন ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে গিয়ে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসছে অসংখ্য রোগী। এদের মধ্যে শিশুরোগ ছাড়াও মেডিসিন, সার্জারি ও গাইনিসহ প্রতিটি ওয়ার্ডের চিত্র একই।
শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর স্বজন তাসলিমা জানান, কয়েকদিন ধরে বান্দরবানে প্রচুর শীত অনুভূত হচ্ছে। তীব্র শীতে প্রচুর কষ্ট হচ্ছে সবার আর শিশুদের এই কষ্ট সীমাহীন। তিনি আরও বলেন, তার শিশুর হঠাৎ ডায়রিয়া দেখা দিলে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে স্যালাইন দেওয়া হলে বর্তমানে শিশুটি আগের চাইতে কিছুটা সুস্থ হয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তি লিটন দাশ বলেন, একদিকে তীব্র শীত, অন্যদিকে রোগী বাড়ছে সবার ঘরে ঘরে আর এই মুহূর্তে নানা ধরনের রোগব্যাধি বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, হঠাৎ করে রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত নিয়েছি। কিছুটা সুস্থ হলে আর শীত কমলেই উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাবো।
বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত ) ডা. মোহাম্মদ ইস্তিয়াকুর রহমান বলেন, ঠান্ডাজনিত কারণে সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, এটি সামনে আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের যে সংখ্যক চিকিৎসক ও নার্স রয়েছে তারা সাধ্যমতো রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে। শীতের এই সময়টা শিশুদের গরম কাপড় পরিধানসহ অপ্রয়োজনে সবাইকে বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেন সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ ইস্তিয়াকুর রহমান।