এই সরকারের অধীনে মানুষের জানমাল, ইজ্জত কোন কিছুই নিরাপদ নয় বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অবস্থান কর্মসূচীতে এ মন্তব্য করেন তিনি। সরকারী দলের দুর্বৃত্তদের হাতে সিলেটের এমসি কলেজ চত্বরে নববধুর সম্ভ্রমহানি, নোয়াখালী বেগমগঞ্জে গৃহবধূর নারকীয় বিভৎসতাসহ দেশব্যাপী অব্যাহত নারী ও শিশুর উপর ঘৃন্য সহিংসতা প্রতিবাদে এ অবস্থা কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচীর আয়োজন করে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মামলা করে, হামলা করে ভেবেছিল বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে দিবে কিন্তু গতকালের সমাবেশে, আজকের সমাবেশ প্রমাণ করে বিএনপির মতো দলকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে মানুষ প্রতিবাদ করে, রুখে দাঁড়ায়, একদিন অত্যাচারীর পতন ঘটে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সব টাকা খেয়ে ফেলেছে তারা। দেশের যতগুলো ব্যাংক ছিল সব খালি করে ফেলেছে। বড় বড় অফিস-আদালত, যে সব প্রতিষ্ঠান টাকা ইনকাম করে সেখান থেকে টাকা লুট করেছে। দেশের যত ব্যবসা-বাণিজ্য সব জায়গা থেকে টাকা লুট করেছে।
সবকিছুর দাম বাড়িয়েছেন, মানুষ খুন করেছেন, এবং গুম করেছেন। বিরোধী দলকে মাঠে রাখবেন না সেই রকম ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু যতই অত্যাচার করেন জুলুম করেন। কিন্তু মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছে।
বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ১৯৭২, ৭৫ সালে শহীদ মিনারে বোনদেরকে লাঞ্ছিত করেছিল কারা? রাতের আধারে বোনেরা শহীদ মিনারে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। দিনের আলোর জন্য অপেক্ষা করতো তারা, এই ছাত্রলীগ যুবলীগের অত্যাচারে কারণে।
গণজাগরণ মঞ্চ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শাহবাগের মোড়ে রাতের পর রাত খাবার সাপ্লাই দিয়ে, টাকা দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে, তাদেরকে লালন-পালন করা হয়েছে। কি হয়েছে? যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই বলে মাসব্যাপী এমন একটা অবস্থা তৈরি করা হয়েছিল। যা আইনের কতটা সঠিক প্রয়োগ করা হয়েছিল জানি না। কিছু মানুষের জীবনে চলে গেছে। সামাজিক যে প্রভাবটি হয়েছিল আজকের সেটাই সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার বিষয়।
তিনি বলেন, আজকে যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে শিশু বাচ্চারা যখন প্রশ্ন করে ধর্ষণ কি? তখন সেটার উত্তর আমরা দিতে পারি না। এজন্য আমি বলি মাদক যেমন মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর, আওয়ামী লীগ তেমন স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। মাদক যেমন জীবনকে ধ্বংস করে দেয়, আওয়ামীলীগ তেমন মানুষের সম্ভ্রম নিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে দেয়। মাদক যেমন ধীরে ধীরে একটি মানুষের স্বাভাবিক জীবনকে কেড়ে নেয়, তেমন আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষের স্বাভাবিক বিকাশের সমস্ত প্রক্রিয়াকে কেড়ে নেয়। এদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। এদের দলনেতা শেখ হাসিনাকে ওই জায়গা থেকে না সরানো পর্যন্ত এই লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিনের জন্য, প্রয়োজনে চিরদিনের জন্য যেন বিদায় নেয় সেই ব্যবস্থা করে আমরা ঘরে ফিরবো।
নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম সদস্য সচিব নীপুন রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক বেগম সেলিমা রহমান। উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল প্রমুখ।