আবুধাবি: মাছ ধরতে গিয়ে ২ বাংলাদেশি নিহত

সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে এক হৃদয়বিদারক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই বাংলাদেশি প্রবাসী নিহত হয়েছেন। এই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন প্রবাসী। ট্রাকের ধাক্কায় গাড়ি দুটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং সেগুলোতে আগুন ধরে গেলে মর্মান্তিক এই প্রাণহানি ঘটে।

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার আমির হোসেন রুবেল (৪২) এবং সিলেটের বিছানাকান্দি এলাকার নাসির উদ্দিন (৪৮) এই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার মোহাম্মদ মোক্তার আলী (৩৫)।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ভোরে আবুধাবির সিলা হাইওয়ে (বর্তমান খলিফা বিন জায়েদ রোড), ১১ নম্বর এক্সিটের আগে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

আহত মোক্তার আলী জানান, সেদিন ভোরে তিনি এবং নাসির উদ্দিন আবুধাবি শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরের হামিম এলাকায় মাছ ধরতে যাচ্ছিলেন। পথে গাড়িতে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় তিনি সেটি রাস্তার পাশে থামিয়ে বন্ধু আমির হোসেন রুবেলকে সাহায্যের জন্য ফোন করেন।

রুবেল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ত্রুটিযুক্ত গাড়ির কুল্যান্টে পানি দেওয়ার কাজ শুরু করেন। সেই সময় রুবেল ও নাসির—এই দুজন গাড়ি দুটির মাঝখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ঠিক তখনই পেছন দিক থেকে আসা দ্রুতগতির একটি ছয় চাকার ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাদের গাড়ি দুটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। ধাক্কার পর ট্রাকটি গাড়ি দুটিকে প্রায় আধা কিলোমিটার টেনে নিয়ে যায়।

ধাক্কার তীব্রতা এবং ঘর্ষণের ফলে মুহূর্তেই তিনটি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই রুবেল দগ্ধ হয়ে এবং নাসির মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে মারা যান। মোক্তার আলী ঘাড় ও পায়ে আঘাত নিয়ে প্রাণে বেঁচে যান। তাকে সঙ্গে সঙ্গে মাফরাক বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের মরদেহ বানিয়াস সেন্ট্রাল মর্গে রাখা হয়েছে।

নিহত রুবেল এবং নাসির দুজনেই দীর্ঘদিন ধরে আবুধাবিতে আবাসন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রুবেল ১৮ বছর এবং নাসির ১৭ বছর ধরে প্রবাস জীবন যাপন করছিলেন।

আমির হোসেন রুবেল তাঁর স্ত্রী ছাড়াও ১২ ও ১ বছরের দুই ছেলে এবং ৭ বছরের এক মেয়ে রেখে গেলেন।

নাসির উদ্দিন ১১ বছরের এক মেয়ে এবং ৫ বছরের এক ছেলে রেখে গেছেন।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ট্রাক চালক সম্ভবত ঘুমের মধ্যে থাকায় এই মারাত্মক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার পর পরই পুলিশ ট্রাক এবং তার চালককে আটক করেছে। প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া ও তদন্ত শেষে নিহতদের মরদেহ দ্রুত দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে আহত মোক্তার আলী জানিয়েছেন।

Share:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *